ফুটবল ম্যাচে হেরে গিয়ে 
ঠোঁট চেপে বাড়ি ফিরে মিথ্যে বলেছি বহুবার 
গলা কাঁপে নি একবার ও 
শুধু রাত্রিবেলা ভিজে গিয়েছে বালিশ 

ইংরেজীতে ফেল করবার পর 
চড় আছড়ে পড়েছে গালে 
রাগে রি রি করে জ্বলেছে শরীর - 
তবু চোখ ফেটে জল আসে নি এক ফোঁটা ও 
আর  রাত্রিবেলায়, 
মায়ের ঠাণ্ডা হাত যখন এলোমেলো 
করে দিচ্ছে মাথার চুল, 
আমি বুকভাসানো কান্নার সূখ স্পর্শ করতে শিখেছি

সারা রাত জেগে লেখা পোস্টার 
যখন পরের দিন ছিঁড়ে কুটি কুটি হয়ে নর্দমায় ভেসে গেছে 
তখন নয় 
কলেজ ইউনিয়নে হেরে যাবার পরেও নয় 
এমনকি পুলিশের থাপ্পড়  খাবার পরেও নয় 
কিন্তু চেনা বন্ধুটি যেদিন অচেনার ভান করে চলে গেল 
আমি কৈশোর পেরিয়ে বড় হয়ে গেলাম 
শিখলাম চোখের জল জমিয়ে রাখতে হয় 
শেষ ট্রেনে বাড়ি ফেরবার জন্য 

তারপর তুমি এলে 
সন্ধ্যায় তারা উঠলো আকাশ জুড়ে 
জোনাকীর আলোয় মহা ধুম ধাম করে 
আকণ্ঠ নাচ গান হল - মাদল বাজল - 
আর উল্লাশ যখন পূর্ণিমার মত উজ্জ্বল 
ঠিক তখনই 
কালবৈশাখী হাওয়া এসে উড়িয়ে নিয়ে গেল আমাদের - 
একরাশ ধুলোর মত ছুঁড়ে ফেলে দিল
পৃথিবীর অন্য কোনায় - অন্য পাঠশালায়
আর সেইদিন থেকে 
আমি যৌবনের লোনা জলে ভাসতে শিখলাম 

এখন মধ্যরাতে ঘুম ভাঙে 
সন্তানের গায়ের চাদর ঠিক করে দিই 
মাথার চুলে বিলি কাটি আনমনে 
ছুঁয়ে থাকি যতক্ষণ ছুঁয়ে থাকা যায়
যেমন করে আমায় ছুঁয়ে থাকতো আমার মা 

আমার সন্ধ্যাতারা, শেষ ট্রেন বনগা লোকাল 
সাগরের লোনা জলে প্রশান্ত হয়েছে বহুদিন  
দৌড়বার মতো কিছু বাকি নেই - বিস্ময় ও নেই 
বলবার মতো কিছু নেই আর 

শুধু জানলার বাইরে অপেক্ষারত অমাবস্যা
আর তার সঙ্গে অবান্তর আলাপচারিতার অভ্যাস


ডালাস