বন্ধুতা

১ একদিন অনেক দূর হেঁটেছি তোর হাত ধরে কৃষ্ণচূড়া রাধাচূড়া ট্রাম লাইনের গা বেয়ে একমাথা চিন্তা আর বুকভরা বাতাস নিয়ে সেইদিন ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করে তোর হাত ধরে অনেক দূর অব্দি হেঁটে গেছি ২ একদিন নদীটিতে স্নান করেছি একসাথে অচেনা পোকা আর বুদ বুদ্ মেখেছি গায়ে সূর্যের দিকে পিঠ দিয়ে চন্দ্রমন্ত্র উচ্চারণ আর জমে থাকা জলে স্বপ্নের তোলপাড় অনামী জলপ্রপাতে - জন্মকাপড়ে ৩ একদিন শেষরাতে প্রান্তস্টেশনে হারিয়ে গিয়েছি একসাথে রাত ভোর করে হাট করে জানলা দরজা খুলে ধোঁয়া আর দোতারায় মনে মনে আরশিনগর আর জবাফুল গান ভোর রাতে - অন্য প্ল্যাটফর্মের দূরগামী ট্রেনটিতে উঠবার ঠিক আগে ৪ এখন মধ্যরাতে দেখা হয় কথা হয় ইথারের মত ছুঁয়ে থাকাটাই সুখ বলে মনে হয় তাকে নিয়ে থাকি একসাথে এক আকাশের নিচে বসবাস করি ডালাস 

ভালবাসা

ভালবাসতে হলে কাছে আসতে হয় তালুতে উপুড় করে রাখতে হয় তালু বাতাসে জুঁই এর গন্ধ ঠোঁটে রক্তের ফোঁটা সন্ধ্যার আবছা নীল রঙ পায়ে পায়ে অন্দরমহলে - আমাদের সেই কুঁড়েঘরে - এখন আষাঢ়স্য প্রথম দিবস কাছে আসতে গেলে ধরে রাখতে হয় পাতার রং সবুজ থেকে ফিকে হয়ে বাদামি মাথায় ক্যানভাসে সময়ের ছোপ ছোপ দাগ পাঁচমিশেলি অভ্যেসের জলছবি শাড়ির আঁচলে বাঁধা পড়ে ছটফট করে মধ্যবয়েস আর তেমন করে ধরে রাখতে গেলে তো ভালবাসতে হয় ইঁট কাঠ পাথরের দেওয়ালের ফাটলে বৃষ্টি জমে তার স্পর্শে পুন্য হয় ইমারত - জড়ো হয় দিন জড়ো হয় আমনের গন্ধ মাখা পৌষালি সুখ তারপর নাচগান - তালুতে খরখরে হাত - একান্ত ব্যক্তিগত ক্রিসমাস ক্যারোল ডালাস 

সময়ে রক্তের দাগ - ১

তুমি ভাবছ এই ভাল হল থাপ্পড় মেরেছি ওদের জং ধরা গালে পুড়িয়ে দিয়েছি বাড়ি ঘর এবং সম্মান এর পর কুকুরের মত ঘুরঘুর করবে পায়ে পায়ে আর মালিকের মত আমি ছুঁড়ে দেব দুয়েকটা রুটি তুমি ভাবছ এই ভাল হল পায়ের কাছে থাকবার কথা যার সে সেখানেই থাকবে আজ থেকে তুমি ভাবছ ওরা না থাকলেই সব ঠিক হয়ে যাবে অমাবস্যা রাতে পূর্ণিমা আলো ঘরে ঘরে অসময়ে দিওয়ালি উৎসব হবে হয়ত চাকরিটাও - হয়ে যাবে এই মওকায় ঠিক যখন তুমি এইসব ভেবে ঘুমোতে গেছো সন্তানকে টেনে নিয়েছো বুকে - পত্নীকে ছুঁয়েছো উত্তাপে হয়তো স্বযত্নে জমিয়েছো ঠাকুরের ফুল চন্দন লেপেছো শালগ্রাম শিলার শরীরে ঠিক তখনই - ঠিক সেই সময়ই তোমার রক্তের শুদ্ধতা বিচার হচ্ছে অন্য এক বিচারসভায় ঠিক কতভাগ হলে বাঁচবার অধিকার কতদিন থাকলে এই দেশ তোমার কোন পার্টি অফিসে কোন ফুল অঞ্জলি দিয়েছিলে এইসব বিচার হচ্ছে আর সমন জারি হচ্ছে তোমার রক্তের প্রামাণ্য দাগে তুমি ভাবছো এই ভাল হল তুমি ভাবছো ? এই সব ভাল হল ? ডালাস 

সময়ে রক্তের দাগ - ২

যেভাবে বলেছো ঠিক সেইভাবে গুছিয়ে রেখেছি ঘর - গেরস্থালি হাওয়া বাতাস আর কাশফুল থরে থরে আলমারি ভর্তি করে এমনকি বলেছো বলে এক নিস্বাসে মাটিতে নামিয়ে রেখেছি পৈতৃক ছবি বিসর্জন দিয়েছি মাতৃভাষা কুরূপা বৃদ্ধা জননীর মত বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসেছি যেটুকু বোধ বাকি ছিল সব যেভাবে বলেছো ঠিক সেইভাবে এই তো নিচু করলাম মাথা তুমি প্রভু ঠিক করে দিও শাঁখা পলা না রিভলবার ডালাস