আত্মকথন
নিজের সম্পর্কে লেখা কঠিন ...
নিজের সম্পর্কে লেখা কঠিন ...
ফেটে যাওয়া জলের পাইপ আর অনাবিল বৃষ্টির জল মিলে মিশে একসাথে বয়ে চলেছে এক অচেনা লক্ষের দিকে।
এখানে সব এমনই হয় – যে যার মতো থাকে – যে যার মতো ভাবে
মনে রাখতে রাখতে উঠোন পেরিয়ে মাঠ ডিঙিয়ে একরত্তি সূধা একদিন বড়ো হয়ে গেল ...
কাউকে দেখলেই মনে হয় সব বলে ফেলি – লুকিয়ে রাখা বাসের টিকিট – জমিয়ে রাখা আধখাওয়া সিগারেটের টুকরো – চোখের কোন দিয়ে ক্যান্টিনের দূরতম টেবিলের নীল সালোয়ার কামিজকে মেপে নেওয়া – আদেখলার মতো ফিল্ম উৎসবে বিদেশী ছবি দেখা ...
বিকেলের পড়ন্ত আলো এসে পড়েছে চুলে – কাঁধ ছাড়িয়ে পিঠে শিশুর মতো হাসিমুখ একগাল রোদ্দুর … কপালে চিক চিক করছে ফোঁটা ফোঁটা ঘাম … মনে হয় রুমাল দিয়ে মুছে দিই … “কেমন আছিস বুনু?” ফিস ফিস করে শীতের হাওয়ার মত ওর কানে কানে …
তিস্তা কাঁদছে ... দুপাড় ভাসিয়ে বিছানা ওলট পালট করে কাঁদছে –
পাপ জম্ছে রাস্তায় – হাতে পায়ে মাথায় যেমন ভোরবেলার শীত জমে থাকে – তেমন পাপ ..
এই পথ তেপান্তরে যায় ... কেউ পৌছতে পারে – কেউ পারে না ... কাঁচের মতো স্বচ্ছ হাডসনের ভেতর দিয়ে ছুটে চলেছে এক ট্রেন মানুষ ... সাদা, কালো, খয়েরি রঙের মানুষ ... গায়ে গা ঘেসে পায়ে পা মাড়িয়ে মনে মন ঠেকিয়ে সকলের মধ্যে একদম একা একা অনেক মানুষ – ঘড়ির কাঁটা ধরে আকাশের দিকে উঠে যাওয়া এস্কেলেটরের প্রতিটি পাদানীতে ক্ষণজন্মা জীবনবোধ – সভ্যতার অহংকার।
কলকাতায় সন্ধ্যা নামে অনেক পরে – আমাদের এই মফঃস্বলে তার আগেই শীতের ভারী চাদর নেমে আসে।
এলোমেলো ফ্ল্যাটবাড়িতে খসে পড়া পলেস্তারার গায়ে শস্তা আকাশী পোঁচ– পুরোন আসবাবে ধুলো ঝেড়ে – জানলা দরজা পরিষ্কার করে – পুরোন আল্নায় পাট করা পায়জামা পাঞ্জাবী – শাড়ি। বাথ্রুমে গিজার – সিঁড়ির আলো কেটে গিয়েছিল
যদি প্রেম দিলে না প্রানে – তবে আর কি – আকাশ গানে ভরিয়ে দিয়ে অন্য পথে চলেই যাবো একা – সঙ্গে নেব কাগজ কলম –অন্যমনা বইপত্তর –
পায়ের মধ্যে জড়িয়ে যায় পা জল জমেছে রাস্তা টলোমলো একটা দুটো পাপ করেছি আজ তোমার তাতে কি আসে যায় বলো ?
লোকের ঢল নেমেছে স্টেশনে – রোজ যেমন নামে তেমনই আর কি ... জোড়ে কিম্বা বেজোড়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড় – গ্যালপিং পেলে শান্তি – দরজার ধারে একফালি হাওয়ায় গা লাগিয়ে মনটাকে বাইরে উড়িয়ে দেওয়া ...