২১ শে ফেব্রুয়ারী - ২০২৪

যার কাছে কথা বলতে শিখেছিলাম তিনি এখন হাসপাতালে শিরদাঁড়ায় টান ধরেছে উঠে দাঁড়ান বড় মুশকিল তাঁর দিকে তাকাতে ভয় করে বরং আমি অন্য ভাবে কথা বলতে শিখে গিয়েছি যেভাবে ফেসবুক কথা বলে কিম্বা গ্লোবালাইজ ভারতবর্ষ আমি সেই ভাষ্য আয়ত্ত করেছি মন দিয়ে তাই - যার কাছে কথা বলতে শিখেছিলাম যিনি এখন হাসপাতালে আমার কথা বুঝতে তাঁর বড় অসুবিধা হয় আর আমি " মহান একুশের আত্মকথা" লিখে ফেসবুকে পোস্ট করলাম এখন লাইকের হিসেব গুনছি যার কাছে কথা বলতে শিখেছিলাম যিনি এখন হাসপাতালে তাঁর শিরদাঁড়ায় টান ধরেছে উঠে দাঁড়ান বড় মুশকিল ২১ শে ফেব্রুয়ারী ২০২৪ রাহুল গুহ ডালাস ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ডালাস 

অভ্যাস

১। এভাবে সন্ধ্যা নামে শহরের ক্লান্ত কপালে আমরা এদিক ওদিক ছড়িয়ে যেতে যেতে নেহাত অভ্যাসে মুঠো বন্ধ করে ফেলি - ভাবি - এই তো বন্দী করেছি তোকে - আর ঠিক সেই সময় আদেখলা ছেলেটার মত ঘুড়ির পেছনে দৌড়ে চলে যায় একরাস পশ্চিমী হাওয়া এভাবেই আমার শহরের আঁচল এলোমেলো হয়ে কোথায় কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছে আর আমি অভ্যাসে বার বার বাড়ি ফিরে আসি ২। তারপর আমি বাড়ি ফিরে এসে দুয়ার বন্ধ করে আরাম কেদারায় আধশোয়া হয়ে বসে গুনগুন করে গান গাই নিজেই শুনি কেননা অন্য সকলেই নিজের গুহায় একা একা বসে নিজের গাওয়া গান নিজেই শুনতে ব্যাস্ত মার্চ ২০২৪ ডালাস 

আয় বৃষ্টি

আয় বৃষ্টি ঝেঁপে ধান দেবো মেপে সঙ্গে দেবো মান ভাসিয়ে দেবো বুক ছাপিয়ে তিলোত্তমার গান আয় বৃষ্টি আয় ঘরের মধ্যে আয় লক্ষ চোখের কান্না ভাসুক পথের আঙিনায় আয় বৃষ্টি বুকে বেঁচে উঠবার সুখে প্রতিবাদটি যত্ন করে লালন করিস বুকে আয় বৃষ্টি মাথায় কথায় ও রূপকথায় আয় সঙ্গে থাক আদরে আর ভালবাসায় হাতটি ধরে থাক ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ডালাস

জন্মদাগ ৪২০

সত্য বলতে পারি না তাই আড়ালে আবডালে মধ্যরাতে কবিতার তাঁবেদারি করি শব্দের তুলিতে আঁকি বাংলার ফেলে আসা অনাবিল মুখ শূণ্য গেলাসের মতো রাজপথে ফেলে দিই ভাঙা অঙ্গীকার আর - পড়ে থাকে দুচোখ কালো করে জমে থাকা একরাশ অসহায় মেঘে ঢাকা তারা - তার দিকে তাকাতে ভয় করে তখন অঙ্ক কষি কতো ধানে ঠিক কত মণ "মন" কেনা যায় সত্য বলতে পারি না তাই আড়ালে আবডালে মধ্যরাতে কবিতার তাঁবেদারি করি ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ডালাস 

তিলোত্তমা অভয়া

যেখানে তাঁর পড়েছে পা সেইখানে রক্তের ছাপ লেগে আছে যখন টিপেছে তাঁর গলা সেখানেই থেমেছে সময় ঠোটের পাশ দিয়ে গড়িয়ে পড়তে পড়তে রক্তের শীর্ণকায় অসহায় শ্রোত বন্ধ্যা মরা পাথরের শরীরে জন্ম দিয়েছে এক বেজন্মা অসহ্য জ্বালা সেই জ্বালা ক্রোধ হয়ে বড়রাস্তা উপচে এর ওর জানলা দরজা হাট করে খুলে দিয়ে প্রাসাদের ভেতর থেকে চুল ধরে হিড় হিড় করে টেনে বাইরে বের করে নিয়ে আসছে রাজাদের রানিদের মাফিয়া পারিষদ দের এভাবেই - মধ্য রাতে ভোর হয় একা নয় সকলের সাথে একসাথে পাখীটির ডানার আদরে লক্ষীর পায়ের ছাপ গৃহস্থ বাড়িতে বার বার ফিরে ফিরে আসে আর তখন সে ঘুমাতে যায় নিশ্চিন্তে চিরঘুমে .. ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ডালাস

দায়

১। আচ্ছা - এভাবে কতোদিন ? সত্যিই কি কিছু হবে ? ওরা ব্যাপক শক্তিশালী - রুথলেস আমরা কি পারব ? রাত্রি গভীর হলে উজ্জ্বল নিওনের ছায়ায় মাথা দপদপ করে ব্যারিকেডের ওদিকে কিছু উর্দিধারি ভিখারি ব্যাকগ্রাউন্ডে দাবা আর বোড়ের চাল আর হাইরাইজের ওপর থেকে শ্যেন দৃষ্টিতে নজর রাখছে শকুনের দল আমরা কি পারব ? ২। যে মরেছে সে তো মরে বেঁচে গেছে আর্ত চীৎকার করে সপাটে থাপ্পড় মেরে দিয়ে গেছে শিশুটির মত এক পবিত্র শব তাকে পোড়াবার দায় তার চিতার আগুনে এই রাজপথ শুদ্ধ করবার অতলান্ত দায় ৩। চিতায় যখন উঠেছে সম্মান হিসাব দিতে হবেই রাজপথে বাসরটিতে জমুক কালো ধোঁয়া নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হলে হোক ম্লান হয়ে যাক উর্দি, জমা খাতা গেরুয়া নীল সবুজ ও লাল - সব রাজপথকে শুদ্ধ করার দায় আমার শপথ তিলোত্তমার কাছে ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ডালাস

পতাকাগুলো সরিয়ে নাও

পতাকা গুলো সরিয়ে নাও আমার লাগছে যখন তোমাদের উল্লাস শকুনের দৃস্টিতে চেটেপুটে নষ্ট করছিল সবকিছু উর্দির অন্তরালে শ্মশানের অন্ধ দাবানলে তখন আমার চোখের জল রক্ত হয়ে গড়িয়ে পড়ছিল নর্দমায় তোমরা চেয়েও দেখোনি কোনোদিন বরং বাসরে ঢুকিয়ে দিয়েছো কালসাপ তাই এখন আমার সমস্ত শরীরে ছোবলের দাগ বিষক্রিয়ায় নীল - ঠোঁট ভুরু সেই দিন বেহুলা মরেছে বাংলার রাজপথে লক্ষীন্দরের বুকে মাথা রেখে তোমরা কেউ চেয়েও দেখো নি ! তাই আজ পতাকা গুলো সরিয়ে নাও আমার ভীষণ লাগছে ৮ সেপ্টেন্বর ২০২৪ ডালাস

প্রতিবিম্ব

ঠিক যা যা শোনবার কথা - তাঁদের চোখ বুজে বিস্বাস করবার আগে প্রশ্ন করো - টিপে টুপে কানকো তুলে রক্তের রং দেখো যেমন দেখে শুনে বাজার করো ঠিক সেইভাবে কেননা একবার কেনা হয়ে গেলে দায় কিন্তু তোমারই বর্তাবে রং বেরং এর পেটকাটি ঘুড়ি আকাশে উড়ছে তাঁদের মাটিতে নামানোর দায় তোমার নয় কেননা মাটিতে নেমে এসে তাঁদের সমস্ত রং বদলে যাবে - যাবেই বরং ভাল করে আয়নার দিকে তাকাও কিম্বা চলমান নদীর দিকে কিম্বা সন্ধের কুয়াশার দিকে যেখানে নিজের প্রতিবিম্ব আবছা হলেও ঠাওর করা যায় বাজারের সবজি, চাঁদিয়াল ঘুড়ি কিম্বা একলক্ষ বত্রিস বার শোনা কথার চেয়ে নিজের আবছা অবয়ব অনেক সূন্দর বরং তাকে রং করো দেখবে ফুলের মতন তুমিও এক বাগান হয়েছো ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ডালাস 

বিশ্বাস

যে একসাথে রাত জাগে তার নেহাত আটপৌরে স্পর্শ - গভীর আদর রাতভোর গায়ে - হাতে পায়ে - মাথার উস্কোখুস্কো চুলে জড়িয়ে থাকে - তাকে বন্ধুতা বলি আর তেত্রিস বছর ধরে যে যে কথা রাখবার ছিল আর যে যে কথা রাখে নি কেউ - কোনোদিন তাতে - নীল-সাদা লাল সবুজ গেরুয়া রং অশ্লীল ভাবে লেগে থাকে ঈশ্বর কিম্বা বন্দুকের নল থেকে নয় রংহীন আদর আর বন্ধুতার গর্ভ থেকে আজন্ম বিশ্বাসের ভ্রূণ জন্ম হোক ১২ সেপ্টেমম্বর ২০২৪ ডালাস

ভেলা

যে ভেলা ভেসেছিল একদিন লক্ষীন্দরের দংশিত শবদেহ নিয়ে বেহুলার দুচোখের জল হয়ে তাতে আজ লক্ষ লক্ষ মুখ তাতে আজ লক্ষ লক্ষ মুখ অবুঝ ইচ্ছের মত তারা দাঁড়িয়ে আছে যৌবনের পবিত্র বিশ্বাসে রাজপথে - রান্নাঘরে - বৃস্টির অঝোর কান্নায় তিলোত্তমার বুকে মাথা রেখে তারা অপেক্ষায় আছে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ডালাস